কন্টেইনার সংকটে লাগামহীন পণ্য, বেড়েছে আমদানি-রফতানি খরচ

কন্টেইনার সংকটে লাগামহীন পণ্য, বেড়েছে আমদানি-রফতানি খরচ

সারাবিশ্বে পণ্য পরিবহনে জাহাজ এবং ফাঁকা কন্টেইনার সংকট দেখা দিয়েছে। এশিয়ায় তীব্র হয়েছে ফাঁকা কন্টেইনার সংকট। ব্রিটেনের সমুদ্রবন্দরগুলোতে নেই পর্যাপ্ত জাহাজ কিংবা পণ্য পরিবহনের কন্টেইনার। এ সংকট অব্যাহত থাকতে পারে কয়েক মাস বলে জানা গেছে।

ব্রিটেনের একজন ব্যবসায়ী আগে চীন থেকে পণ্য আমদানি করতে একেকটি কন্টেইনারের জন্য দিতেন ১৬শ’ পাউন্ড। সেই জায়গাতে এ মাস থেকে দিতে হচ্ছে ১০ হাজার পাউন্ড। মুনাফা তো পাচ্ছেন না বরং বাড়ছে লোকসান।

সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে পণ্য আমদানি রফতানি খরচ। করোনা মহামারির কারণে এ সংকট আরো প্রকট হয়েছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে ব্রিটেন। ভোগান্তিতে পড়ছে পণ্যবাহী কোম্পানিগুলো। লকডাউনে মানুষ অনলাইন কেনাকাটায় ঝুঁকে পড়েছেন। বেড়েছে চীনা পণ্যের চাহিদা, সেই সঙ্গে বেড়ে গেছে পরিবহন খরচ। অনেক কোম্পানিই বাড়তি শিপিং খরচ দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

চীনের গুয়াংঝু থেকে লাইট তৈরির যন্ত্রাংশ আমদানি করা ব্রিটেনের ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি খরচ ৬ গুণ বেড়ে গেছে। খালি কন্টেইনার পাওয়া এখন স্বর্ণ হাতে পাওয়ার মতো হয়েছে। একই অবস্থা চীনা ব্যবসায়ীদের।

ব্রিটেনের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের জন্য গার্মেন্টস পণ্য প্রস্তুত করা চীনা কোম্পানিগুলোও শিপিংয়ের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে। আগে যেখানে কন্টেইনারে পণ্য পরিবহনে আড়াই হাজার ডলার লাগত এখন লাগছে ১৪ হাজার ডলার।

সাধারণত নতুন বছরের ছুটি উপলক্ষে চীনের কারখানাগুলো ২ সপ্তাহ বন্ধ থাকে। ওই সময়টায় ব্রিটেনের বন্দরগুলো জাহাজের কন্টেইনার খালি করে আবারো এশিয়ায় পাঠানোর জন্য অনেক সময় পায়। কিন্তু এ বছর করোনার প্রকোপ কমায় কারখানাগুলো সারাবিশ্বে পণ্য সরবরাহের জন্য অনবরত কাজ করে যাচ্ছে। দীর্ঘ হচ্ছে পণ্য জট। কিন্তু কন্টেইনার সংকটে সেগুলো পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না।

ব্যবসায়ীরা জানান, এ সময়টায় ব্যবসা সচল রাখতে জাহাজের সংখ্যা আরো বাড়ানো উচিত।

কিন্তু ওয়ার্ল্ড শিপিং কাউন্সিল জানায়, ক্ষমতার পুরোটাই ব্যবহার করছেন তারা।

একটি কোম্পানি ৪০ ফিটের একটি কন্টেইনার চীন থেকে সাউদাম্পটন পরিবহনের জন্য ১২ হাজার ডলার দাবি করেছে। কিন্তু একই কন্টেইনার চীন থেকে হ্যামবার্গ গেছে সাড়ে ৮ হাজার ডলারে। ব্রিটিশ বৃহত্তম কন্টেইনার বন্দর ফেলিক্সটো অক্টোবর থেকে এ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

অথচ মহামারির প্রথমদিকে, স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর যথেষ্ট আমদানি রফতানি হয়েছে। কন্টেইনার সরবরাহ করতে যেয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে বন্দরগুলোকে। এখন একদিকে কন্টেইনার সংকট, অন্যদিকে অতিরিক্ত চার্জের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।

আপনি আরও পড়তে পারেন